ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩ টিতে নৌকার বিজয় হয়েছে। বাকি ৮ টির মধ্যে ৩ টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, ৩ টিতে জাতীয় পার্টি ও ২ টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছে। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণা করেন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, নৌকার প্রার্থী নির্বাচন সঠিক ছিল। বিদ্রোহীদের কারণে ফলাফলের বিপর্যয় হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর বিদ্রোহীদের দাপটে নৌকার অধিকাংশ প্রার্থী বেকায়দায় পড়ে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারিভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঈশ্বরগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মোঃ আবু হানিফা নৌকা প্রতীকে ৫ হাজার ৬১২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হারিছ উদ্দিন আহম্মদ চশমা প্রতীকে ৩ হাজার ৭৬৬ ভোট পান। সেহাগী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাদির আহম্মেদ ভুঁইয়া টেবিল ফ্যান প্রতীকে ৪ হাজার ০৪৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আজিজুল হক চশমা প্রতীকে ৩ হাজার ৩২৭ ভোট পান।
সরিষা ইউনিয়নে আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী একরাম হোসেন ভুঁইয়া টেবিল ফ্যান প্রতীকে ৮ হাজার ২৮৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ শাহজাহান ভূঞা হক নৌকা প্রতীকে ৬ হাজার ৯৮৯ ভোট পান।
আঠারবাড়ি ইউনিয়নে আ’লীগ প্রার্থী জুবের আলম কবীর রূপক নৌকা প্রতীকে ১০ হাজার ৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আনোয়ার হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ৫ হাজার ৪৫০ ভোট পান। জাটিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামছুল হক ঝন্টু চশমা প্রতীকে ৪ হাজার ৫৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোঃ আব্দুল গনি লাঙ্গল প্রতীকে হাজার ৫১২ ভোট পান।
মাইজবাগ ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী ছাইদুল ইসলাম বাবুল লাঙ্গল প্রতীকে ৫ হাজার ২৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ প্রার্থী মোঃ আব্দুল গনি নৌকা প্রতীকে ৫ হাজার ২২৯ ভোট পান। মগটুলা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন আকন্দ আনারস প্রতীকে ৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আশকর আলী ঘোড়া প্রতীকে ৪ হাজার ৫৪৭ ভোট পান। রাজিবপুর ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী আবদুল আলী ফকির লাঙ্গল প্রতীকে ৫ হাজার ৭৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মোটর সাইকেল প্রতীকে ৪ হাজার ৭৫০ ভোট পান। উচাখিলা ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম লাঙ্গল প্রতীকে ৬ হাজার ৪৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস কোরাইশী (টিটু) আনারস প্রতীকে ৫ হাজার ৭৮১ ভোট পান।
তারুন্দিয়া ইউনিয়নে আ’লীগ প্রার্থী হাসান মাহমুদ নৌকা প্রতীকে ৩ হাজার ৭২১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব আলম মোটর সাইকেল প্রতীকে ৩ হাজার ৫০৩ ভোট পান। বড়হিত ইউনিয়নে আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আজিজুল হক ভুইয়া মিলন ঘোড়া প্রতীকে ৫ হাজার ৪৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ প্রার্থী শাহ জালাল নৌকা প্রতীকে ৪ হাজার ১০ ভোট পান। ইউপি নির্বাচনে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, দলীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয়ের অভাব, আন্তঃকলহ, একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী, কালো টাকার প্রভাব ও দলীয় পদ বাঁচানোর জন্য উপরে উপরে নৌকার প্রার্থী ও ভেতরে অন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার কারণে এমন ফলাফল হয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।